নিজস্ব প্রতিবেদক: গত দুইদিনে ব্রহ্মপূত্র ও ধরলা নদীর পানি যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল। শনিবার সকালে ব্রহ্মপূত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২২ সেন্টিমিটার এবং ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ২২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি বাড়ার সাথে সাথে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। সেইসাথে বানভাসী এলাকায় দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত তিনদিনে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৯ উপজেলার ৩০টি ইউনিয়নের প্রায় ১২৫টি গ্রামের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রৌমারী, উলিপুর ও সদর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির বেশি অবনতি ঘটেছে। বন্যায় জেলায় প্রায় ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। ফসলাদি নিমজ্জিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর। নদী ভাঙন ও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় বানভাসী মানুষ রয়েছে চরম দুর্ভোগের মধ্যে।
এদিকে তীব্র পানির স্রোতে নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট এলাকায় অস্থায়ী বেড়িবাঁধের ২০/২২ ফুট ভেঙে মেইনল্যান্ডের ফসলাদি তলিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে উপাজেলা প্রশাসন থেকে রৌমারীতে ৬ হাজার এবং সদর উপজেলায় প্রায় ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা পর্যায়ে ২০ লক্ষ টাকা এবং ৪০০ মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার। তবে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেদুল হাসান জানান, আমরা দুর্গত এলাকা পরির্দশন করছি। এরই মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম এবং শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক কৃষিবিদ আব্দুর রশীদ জানিয়েছেন, দ্বিতীয় দফা বন্যায় তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়েছে। পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে নেয়া হবে। যাতে বন্যা পুনর্বাসন প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় তাদেরকে সহযোগিতা করা যায়।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.