নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রংপুরে নবনির্মিত অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত জেলা শিল্পকলা একাডেমির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল বুধবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১১টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মাধ্যমে রংপুরসহ দেশের ৮টি শিল্পকলা একাডেমি উদ্বোধন করবেন তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন ছাড়াও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন ও নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, মৌলভীবাজার, পাবনা, কুষ্টিয়া, খুলনা, মানিকগঞ্জ ও রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ ও শিল্পীরা সংযুক্ত থাকবেন।
রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভবন উদ্বোধনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু কয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক গোলাম রব্বানী ও শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার নুঝাত তাবাসসুম রিমুসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নবনির্মিত ভবনটি পরিদর্শন করেন। এর আগে গত মার্চ মাসে রংপুর সফরে এসে নবনির্মিত শিল্পকলা একাডেমি ভবনটি পরিদর্শন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও চর্চার উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচিত রংপুরে ২৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বিভাগীয় এই শহরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির নতুন ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। পাঁচতলা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই শিল্পকলা একাডেমির উদ্বোধন ঘিরে আনন্দে উদ্বেলিত এখানকার শিল্পী-কলাকুশলী ও সংগঠকরা। রংপুর মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে টাউন চত্বরে পুরাতন শিল্পকলা একাডেমি ভবনের পাশেই প্রায় ৪৫ শতাংশ জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক শিল্পকলা একাডেমি ভবনটি।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বরাদ্দ দেরিতে আসায় প্রায় ৮ মাস পর এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় কয়েক দফায় মেয়াদও বাড়িয়ে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখন নির্মাণ কাজ শেষে শুধুই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষা। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ ও জিওবির (উন্নয়ন) অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন এই ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে গণপূর্ত বিভাগ।
গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণাধীন নতুন এই ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলা মিলে ৫০০ আসন বিশিষ্ট সুবিশাল একটি অডিটোরিয়াম রয়েছে। পাশাপাশি ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডে গাড়ি রাখার গ্যারেজ, দ্বিতীয় তলাতে কনফারেন্স রুম ও আর্ট গ্যালারি, তৃতীয় তলায় ক্যাফেটেরিয়া, চতুর্থ তলায় লাইব্রেরি এবং পঞ্চম তলায় সুসজ্জিত ডরমিটরি রয়েছে। ভবনের বিভিন্ন তলায় শ্রেণি কক্ষ, অফিস কক্ষ, প্রশিক্ষক কক্ষসহ অন্যান্য কক্ষ রয়েছে। এ ছাড়া সর্বাধুনিক সাউন্ড সিস্টেমসহ নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। বিশাল পরিসরের এই শিল্পকলা একাডেমিতে প্রবেশ করতেই নজর কাড়বে দৃষ্টিনন্দন একটি ট্যারাকোটা। এতে রংপুরের ঐতিহাসিক স্থাপনা তাজহাট জমিদার বাড়ি, জেলা পরিষদ ভবন, টাউন হলের পাশাপাশি হাড়িভাঙা আম ও গরুর গাড়ি, একতারা, দোতারা, বাঁশিসহ লোকজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হবার পর কয়েকবার পরীক্ষণমূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়েছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.