মো: মুর্শিকুল আলম: দেশে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে জীবনযাত্রার সর্বক্ষেত্রে নতুন চাপ সৃষ্টি হয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সকল নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুলেছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলোর দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির করে তুললেও বাজার মনিটরিং তেমন দৃশ্যমান নয়।
অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, বাজার পর্যবেক্ষণে জড়িত অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজশ রয়েছে। এর ফলে এইসব অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তিপাওয়া খুবই জরুরী। মানুষের আয় না বাড়লেও যেভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে, মানুষ এ চাপ সহ্য করবে কীভাবে? তেলের দাম বৃদ্ধির পরদিন থেকেই সব ধরনের পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে।
ট্রাক চালকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রাজশাহী থেকে রাজধানীতে চাল আনতে আগের চেয়ে কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া বেড়েছে। সম্প্রতি মানভেদে এক কেজি চালের দাম চার থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। জ্বালানির অজুহাতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৫০ টাকার বেশি। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২৫ টাকা বেড়ে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকা, বেড়েছে সবজির দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের কারণে অসহনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আরেক দফা বাড়বে, এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এখন অসহায় ক্রেতারা প্রয়োজনের অর্ধেক পণ্য কিনে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছে।
এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হউক। তা না হলে বাজারে স্বস্তি ফিরবে না। এ পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের সুরক্ষার জন্য সামাজিক নিরাপত্তার পরিধি ও সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো জরুরি। এ ক্ষেত্রেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে সরকার এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিরত থাকবে, এটাই প্রত্যাশা করছি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.