নিজস্ব প্রতিবেদক, নারায়ণগঞ্জ : ‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমলারা অনেক অনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। তাই তারা আওয়ামী লীগ সরকারকেই ক্ষমতায় রাখতে চায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে না থাকলে তাদের অন্যায়-অবিচারের বিচার হবে, এই ভয়ে তারা সেটা করতে চাচ্ছে বা করছে। তাই কেউ যদি অবৈধভাবে চোখ রাঙায়, আমরা এর উচিত জবাব দিয়ে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।’
শনিবার (৪ জুন) বেলা ২টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় আজগর কমিউনিটি সেন্টারে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে জেলা যুবদল আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। যুবদলের দরিদ্রদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিজভী। পরে অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ করেন তিনি।
‘বিএনপি মাঠে নামলে আওয়ামী লীগের আমলাদের এত ভয় কিসের’, এমন প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, এই যে কথা বলতে না দেওয়া, মিছিল করতে না দেওয়া, সমাবেশ করতে না দেওয়া, মিছিল কিংবা স্লোগানের ধ্বনি শুনতে পেলেই তেড়ে আসা নেকড়ের মতো লাফ দিয়ে পড়ে। এর কারণ হচ্ছে অনেক কর্মকর্তা সরকারের থেকে অনৈতিক সুবিধা ভোগ করছে। এই সরকার কোথায় অবৈধভাবে হস্তক্ষেপ করেনি?
বিএনপির এই নেতা বলেন, মসজিদের খুতবাতেও কী বলা যাবে কী বলা যাবে না, তা তারা ঠিক করে দেন। কোরআন-হাদিসের আলোকে কথা বলতে গেলে সেখানে অন্যায়-অবিচার সম্পর্কে কথা বলতে হয়। আর এই কথাগুলো বলতে গেলেই তা সরকারের বিরুদ্ধে চলে যায়। এগুলো আমার বা আমাদের দলের কথা না। মার্কিন সরকারের স্টেট ডিপার্টমেন্ট পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর এমনকি মসজিদের ওপর সরকার অবৈধ নিয়ন্ত্রণ করছে। বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরকার হস্তক্ষেপ করছে। কারণ তারা ভোটারবিহীন, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। তাই তারা সবার বাকস্বাধীনতা হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
রিজভী বলেন, এই দেশ তো শেখ হাসিনার বাবার না, আওয়ামী লীগের পৈত্রিক সম্পত্তি না। এই বাংলাদেশে আমাদের পূর্বপুরুষরা বসবাস করেছে, আমরা তাদের উত্তরাধিকার। এই মাটির সন্তান আমরা, আমাদের পূর্বপুরুষরা স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন, অন্যায়-অবিচারের জন্য বুকের রক্ত ঝরিয়েছেন। এই দেশে আমাদেরও অধিকার রয়েছে। আজ একটি অবৈধ শক্তি যদি আমাদের ওপর চোখ রাঙায়, আমাদের যদি প্রজা বানাতে চায়, এটা আমরা মানব না, আমরা মাথা নিচু করে থাকব না।
একটা স্বচ্ছ নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ আপনার ও আপনার দলের অবস্থান কোথায়? ২০১৮ সালে রাতের বেলায় ভোট করেছেন, ২০১৪ সালে ভোট কেন্দ্র ছিল ভোটারবিহীন। এসব করে যারা ক্ষমতায় টিকে থাকে, তাদের জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন ও অত্যাচার করেই ক্ষমতায় টিকে থাকতে হয়। ১৪ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী ক্যাডারদের দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বানিয়েছেন, তারা আজ সশস্ত্র। তাদের বাদ দিয়ে শুধু আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাস্তায় থাকুক, দেখি আপনার কয়জন বীরপুরুষ রাস্তায় থাকে।
পদ্মা সেতু ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রিজভী বলেন, আপনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবেন। আপনার গায়ের জোরের কথায় এ দেশের মানুষ হাসে। আপনার সৎ সাহস থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন দেন, আমরা আপনাকে টুস করে ফেলে দেব না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা যুব দলের আহ্বায়ক গেলাম ফারুক খোকনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব মশিউর রহমা রনির সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মামুন মাহমুদ, মহানগর বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ অন্য নেতাকর্মীরা।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.