স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক কাপাসিয়ার কৃতি সন্তান বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৭তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আজ শনিবার বিকালে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কাপাসিয়া পুরাতন ধান বাজারে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান প্রধানের পরিচালনায় প্রধান অথিতির বক্তব্য রাখেন বঙ্গতাজ কন্যা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায় কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি এমপি। এসময় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ—সভাপতি মাজহারুল ইসলাম সেলিম, আলমগীর হোসেন আকন্দ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা সরকার, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম—সম্পাদক মোঃ মাহবুব উদ্দিন আহমেদ সেলিম, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন প্রধান, সাধারণ সম্পাদক রাজীব ঘোষ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান মামুন, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি সুলতান উদ্দিন প্রমুখ।
এছাড়া সকালে উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের উদ্যোগে তাজউদ্দীন আহমেদ মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে স্থাপিত তাজউদ্দীন আহমদের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করেন। পরে বিকালে একটি বর্ণঢ্য আনন্দ র্যালি উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কাপাসিয়া পুরাতন ধান বাজরের আলোচনা সভায় যোগ দেয়।
উল্লেখ্য, তাজউদ্দীন আহমদ কাপাসিয়া উপজেলার রায়েদ ইউনিয়নের দরদরিয়া গ্রামে ১৯২৫ সালের ২৩ জুলাই জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতা মৌলভি মুহাম্মদ ইয়াসিন খান এবং মাতা মেহেরুন্নেসা খানম। স্কুল জীবন থেকেই প্রগতিশীল আন্দোলন এবং সমাজ সেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাজউদ্দীন। ১৯৪৪ সালে বঙ্গীয় মুসলীম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে তাঁর সক্রিয় রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। এরপর নানা পরিক্রমার মধ্যদিয়ে ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পাকিস্তানী শাসকদের বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ৬ দফা কর্মসূচীর অন্যতম রুপকার ছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ । ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর ১০ এপ্রিল গঠিত মুজিব নগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দীন আহমদ শক্ত হাতে বাঙ্গালির স্বাধীনতার আন্দোলন পরিচালনা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের অর্থ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ব নেন এই নেতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তাজউদ্দীন আহমদকে গৃহবন্দি করা হয় এবং পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্দি অবস্থায় ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাভ্যন্তরে অপর তিন নেতা — সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী ও এ,এইচ,এম কামরুজ্জামানের সঙ্গে তাজউদ্দীন আহমদকেও হত্যা করা হয়। তার জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে জন্মস্থান গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গ্রহন করা হয়েছে নানা কর্মসূচি।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.