দৈনিক বিজয়বাংলা ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশন (বাজেট অধিবেশন) আগামীকাল রোববার বিকাল ৫টায় শুরু হচ্ছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশন বসবে। এর আগে গত ১৮ মে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেন। এই অধিবেশনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ ও পাশ করা হবে। আগামী ৯ জুন বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব পেশ করবেন।
গত ২৮ মার্চ একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তদশ অধিবেশন শুরু হয়ে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত মোট ৮ কার্যদিবস চলে। ওই অধিবেশনে ১০টি স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট উপস্থাপিত হয়। এ ছাড়া কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় আনীত প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের অধিবেশনও করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই অনুষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের এর আগের দুটি অর্থবছরের বাজেট বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতির মধ্যেই দেওয়া হয়। সঙ্গত কারণেই ওই দুটি বাজেট অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিল (মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে অধিবেশনের কাজ চালানো হয়)। এবার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক পর্যায়ে এলেও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা হবে। কারণ এই ভাইরাসের সংক্রমণ এখনো শেষ হয়ে যায়নি বলে সংসদ সচিবালয় সংশ্লিষ্টরা জানান।
অর্থমন্ত্রী আগামী ৯ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পর নিয়ম অনুযায়ী প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সংসদ সদস্যরা আলোচনা করবেন। এরপর আগামী ৩০ জুন প্রস্তাবিত বাজেট পাশ হবে। বাজেট ছাড়াও এই অধিবেশনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিল উপস্থাপন এবং এর আগে উপস্থাপিত কিছু বিল পাশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আগের দুটি বাজেট অধিবেশনে সংসদ সদস্যরা পালা করে অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। তবে এবার সংসদ সদস্যরা চাইলে প্রতি কার্যদিবসে যোগ দিতে পারবেন। সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও নিয়মিত স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সাংবাদিকরাও সংসদ ভবনে গিয়ে অধিবেশনের সংবাদ সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে সংসদ সদস্য, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবনে স্থাপিত করোনা পরীক্ষা বুথে নমুনা নেওয়া হয়েছে। যাদের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসবে কেবল তারাই সংসদে যেতে পারবেন।
জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় সংসদ অধিবেশনে সংসদ সদস্যদের উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও অধিবেশনে এসে যাতে কেউ সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময় পার হলেই অধিবেশনে যোগদানের জন্য নমুনা পরীক্ষা করে করোনা নেগেটিভ সনদ নিতে হবে। ছুটির ছাড়া অন্য দিনগুলোতে অধিবেশন থাকবে বলে তিনি জানান।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার বাজেট অধিবেশন দীর্ঘ হবে। জাতীয় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে অধিবেশনের মেয়াদ ও কার্যসূচি চূড়ান্ত হবে। সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে রোববার বিকাল ৪টায় কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। করোনাকালে অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক স্থগিত ছিল। এই বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণের সরকারের সফলতা নিয়ে সংসদে সাধারণ আলোচনার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংসদে বাজেট পেশের আগে ওইদিন দুপুর ১২টায় সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর অর্থ বিলে স্বাক্ষর করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এ কারণে রাষ্ট্রপতি সেদিন তার সংসদ ভবন কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। অধিবেশনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে সংসদ সচিবালয়।
সংসদ ভবন, সদস্য ভবনগুলো এবং সংসদ এলাকার সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংসদ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ, পানি সরবরাহ, লিফট, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সচল ও সংসদ এলাকার সৌন্দর্য্য বাড়ানো হয়েছে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.