নিজস্ব প্রতিবেদক, ফরিদপুর : মহাসড়কে ছাত্রলীগের একাংশের সশস্ত্র মহড়া দিয়ে জনমনে ভয়-ভীতি, ত্রাস ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, মহাসড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও বাড়িঘর ভাঙচুর করার ঘটনায় ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার পুলিশ।
শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানকালে পরিত্যক্ত অবস্থায় ওই সশস্ত্র মহড়ায় ব্যবহার করা দুটি রাম দা, একটি বড় ছুরি ও একটি লোহার রড জব্দ করা হয়।
রবিবার বিকেলে তাদের পাঁচদিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে রবিবার সকালে মামলা দায়ের করেন কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এ এফ এম আসলাম।পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ ব্যাক্তি হলেন কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির (২৪), নাজমুল (২৪), মো. সাগর বেপারী (২৫) মো. রাকিব খান (২২) এবং তুষার (২৩)।
এ ব্যাপারে রবিবার দুপুর ২টার দিকে জেলা পুলিশের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে গত ২৫ আগস্ট ফরিদপুর সদরের কানাইপুর বজার সংলগ্ন ঢাকা খুলনা মহাসড়কে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একাংশ সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কানাইপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির ও থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৌরভ মিলে একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেয়। অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম আসলাম এবং ছাত্রলীগের কর্মী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পদপ্রার্থী সোহাগ। এই দুই গ্রুপের বিরোধকে কেন্দ্র করে ভ্যন্তরীণ অন্তঃকোন্দল ও ভয়ভীতি দেখানোর জন্য এ শোডাউন করা হয়। শোডাউনের মাধ্যমে আসলাম ও সোহাগকে ভয় দেখানোর জন্য থানা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সৌরভ স্থানীয় সন্ত্রাসী খায়রুজ্জামান ওরফে খাজা গ্রুপের দিদার, শহীদ, সোহেলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে নিয়ে এসে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মহাসড়কে দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে শোডাউন করে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান আরও বলেন, ফরিদপুর শহরের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য কাউকে ন্যূনতম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। ফরিদপুর শহরে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকল অভিযান চলমান থাকবে এবং আরো বেগবান করা হবে। সন্ত্রাসীদের ফরিদপুরের মাটিতে কোন জায়গা দেয়া হবে না।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব করিম বলেন, ওই পাঁচ ব্যক্তির প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে রবিবার বিকেলে ফরিদপুরের এক নম্বর আমলী আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত রিমান্ডের শুনানীর তারিখ পরে নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.